fbhn.blog
Created: Mar 01, 2025, 08:26 PM Updated: Apr 18, 2025, 08:59 PM
0
5126

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি): জন্ম, আদর্শ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা || National Citizen Party (NCP): Its Origins, Ideology & Future Vision

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কি? ইতিহাস, মতাদর্শ ও লক্ষ্য || What is the National Citizen Party (NCP)? History, Ideology & Goals

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) হলো বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত একটি রাজনৈতিক দল, যা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে গঠিত হয়েছে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে, যেখানে নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এটি দেশের প্রথম রাজনৈতিক দল, যা সম্পূর্ণভাবে ছাত্র নেতৃত্বের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে। দলটির সৃষ্টি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের একটি সফল পরিণতি হিসেবে বিবেচিত হয়।

৫ আগস্ট ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন দল গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এই অভ্যুত্থানের সময় নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের এক দফা দাবির মধ্যে নতুন রাজনৈতিক কাঠামোর প্রসঙ্গ তুলে ধরে। এরপর, সেপ্টেম্বরে দেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠিত হয়। ডিসেম্বরে জানা যায় যে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করবে, যার জন্য দেশের প্রতিটি থানায় সাংগঠনিক কমিটি গঠনের কার্যক্রম শুরু হয়। অবশেষে, ফেব্রুয়ারি মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে এবং ২৩-২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দলটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার পরিকল্পনা করে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতীক ও নামের পেছনের গল্প || The Story Behind the National Citizen Party (NCP) Name and Symbol

নতুন রাজনৈতিক দলের নাম নির্ধারণের জন্য এক মাসব্যাপী জনমত জরিপ পরিচালিত হয়, যেখানে বিভিন্ন সম্ভাব্য নাম প্রস্তাব করা হয়। জনগণের মতামত অনুযায়ী, শীর্ষ আটটি নামের তালিকায় উঠে আসে—বিপ্লবী জনতা সংগ্রাম পার্টি, জাতীয় বিপ্লবী শক্তি, বৈষম্যবিরোধী নাগরিক আন্দোলন, বাংলাদেশ নাগরিক দল, জাতীয় নাগরিক কমিটি, ছাত্র-জনতা পার্টি, জাতীয় জনশক্তি পার্টি ও জাতীয় নাগরিক শক্তি। একই জরিপে প্রতীক হিসেবে মুষ্টিবদ্ধ হাত, হাতি, বাঘ এবং ইলিশের নামও প্রস্তাব করা হয়।

দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে সম্ভাব্য নাম নিয়ে নানা তথ্য প্রকাশিত হতে থাকে। প্রতিষ্ঠার মাত্র দুই দিন আগে, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ‘প্রতিদিন বাংলাদেশ’ নামের একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, দলটির নাম হবে ‘রেভল্যুশনারি ন্যাশনালিস্ট পার্টি’ (সংক্ষেপে আরএনপি)। পরদিন, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ‘ঢাকা পোস্ট’ জানায়, নতুন দলের নাম ‘অল সিটিজেনস পার্টি’ বা সংক্ষেপে ‘এসিপি’ নির্ধারণ করা হয়েছে। একই দিনে, ‘আমার দেশ’ পত্রিকা দাবি করে, দলটির সম্ভাব্য নাম হতে পারে ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি’। পাশাপাশি, ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক নাগরিক সংসদ’ এবং ‘বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি’ নামগুলোর কথাও শোনা যাচ্ছিল। তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দলটির চূড়ান্ত নাম হিসেবে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ ঘোষণা করা হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রস্তুতি ও দল গঠনের প্রক্রিয়া: একটি বিশদ বিশ্লেষণ || Formation Process and Preparations of the National Citizen Party (NCP): A Comprehensive Overview

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনায় একাধিক নাম প্রস্তাব করা হয়, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলতে থাকে। ২৭ জানুয়ারি একটি জরিপে দেখা যায়, তরুণরা নতুন দল গঠনের চেয়ে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কারের প্রতি বেশি আগ্রহী। তবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে।

অনেকের মতে, নতুন দলের আদর্শিক কাঠামো তৈরিতে দার্শনিক ফরহাদ মজহারের চিন্তা-ভাবনার প্রভাব ছিল। যদিও তিনি সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন না, তবুও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জনমত যাচাইয়ের জন্য বেশ কিছু জরিপ পরিচালিত হয়। একই সময়ে সম্ভাব্য নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনার অংশ হিসেবে নাহিদ ইসলামের নাম উঠে আসে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি দল গঠনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায় এবং ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে দলটির আত্মপ্রকাশের জন্য ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বা জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে একটি আনুষ্ঠানিক আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়। দলটির প্রধান কার্যালয় রাজধানীর বনানী বা ফার্মগেটে স্থাপনের পরিকল্পনা গৃহীত হয়।

নতুন দল গঠনের পর দ্রুত নিবন্ধন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এছাড়া রাজনৈতিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে একটি লং মার্চ আয়োজনেরও কথা ছিল, যা রংপুর থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ার কথা ছিল। তবে রমজান মাসের কারণে এই পরিকল্পনা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃত্ব ও গঠনতন্ত্র: কাঠামো ও দৃষ্টিভঙ্গি || Leadership and Structure of the National Citizen Party (NCP): Framework and Vision

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত দলটির গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর জন্য বিভিন্ন নাম নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে। মুখপাত্র হিসেবে সামান্তা শারমিন বা উমামা ফাতেমার নাম বিবেচনায় আনা হয়। সদস্যসচিবের পদ নিয়ে কিছুটা দ্বন্দ্ব তৈরি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়। যদিও দলটির উদ্যোক্তারা নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন, তবুও গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে একটি জোট গঠনের সম্ভাবনাও তৈরি হয়।

ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে জানা যায়, দল গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে দেওয়া হবে। নতুন দলের আত্মপ্রকাশের দিনে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের পরিকল্পনা করা হয়, যা পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। দল গঠনের পর প্রথম দুই বছরের মধ্যে একটি কাউন্সিল আয়োজনের মাধ্যমে দ্বিতীয় কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

২৫ ফেব্রুয়ারি নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন দলে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন। একই সময়ে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে ব্যক্তিদের চূড়ান্ত করা হয়। সারজিস আলম উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক ও হাসনাত আবদুল্লাহ দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে মনোনীত হন।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ: নতুন রাজনীতির সূচনা || Official Inauguration of the National Citizen Party (NCP): A New Political Beginning

২৭ ফেব্রুয়ারিতে নতুন দলের নাম ও নেতৃত্ব চূড়ান্ত করা হয়। নাহিদ ইসলাম আহ্বায়ক, আখতার হোসেন সদস্যসচিব, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুখ্য সমন্বয়ক এবং সামান্তা শারমিন যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। দলটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে দেওয়া হয়, যেখানে কেন্দ্রীয় কমিটিও প্রকাশ করা হয়।

নতুন রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য ও কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য আত্মপ্রকাশের পর সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রমজান মাসের কারণে বড় কোনো কর্মসূচি না রেখে অভ্যন্তরীণ কাঠামো শক্তিশালী করায় গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ: নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান || National Citizen Party (NCP) Inauguration: Rise of a New Political Force

২০২৪ সালের জুলাই মাসে দেশের ছাত্র-জনতা এক ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটায়। এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল শুধু একটি সরকার বদল নয়, বরং গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটানো। সেই চেতনা থেকেই ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যাত্রা শুরু হয়। এনসিপি নিজেকে একটি গণতান্ত্রিক, সমতার ভিত্তিতে গঠিত, জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘোষণা করে।

আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে গণআন্দোলনে আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, কূটনীতিক, এবং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন খ্যাতিমান ব্যক্তি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। বিকেল ৪:২০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়, যেখানে ধর্মগ্রন্থ পাঠ ও জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এরপর আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে জুলাই আন্দোলনের শহীদ ইসমাইল হোসেন রাব্বীর বোন আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করেন এবং প্রধান নেতৃত্বের নাম তুলে ধরেন। এরপর দলের ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়, যেখানে এনসিপির আদর্শ ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।

 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মতাদর্শ ও রাজনৈতিক দর্শন || National Citizen Party (NCP) Ideology and Political Philosophy

জাতীয় নাগরিক পার্টির রাজনৈতিক দর্শনের ভিত্তি গঠিত হয়েছে পূর্ববঙ্গের আত্মপ্রকাশ (১৯৪৭), বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম (১৯৭১) এবং ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার ওপর। দলটি প্রচলিত বাম বা ডানপন্থার পরিবর্তে মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দর্শন অনুসরণের কথা ঘোষণা করেছে, যেখানে সাম্য, ন্যায়বিচার ও সুশাসনকে মূল নীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। দলটির প্রতিষ্ঠাতারা মনে করেন, বহুত্ববাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার চেতনাকে ধারণ করতে হলে রাজনৈতিক মতাদর্শে কোনও নির্দিষ্ট মেরুকরণের দিকে ঝুঁকলে তা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই দলটি কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিপরীতে গণতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চায়।

জনসমর্থন বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণের জন্য দলটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক দলের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করছে, যার মধ্যে তুরস্কের একে পার্টি, পাকিস্তানের তেহরিকে ইনসাফ ও ভারতের আম আদমী পার্টির রাজনৈতিক কার্যক্রম বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এনসিপি ভবিষ্যতে এককভাবে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা করছে, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কারের পূর্বে সাধারণ নির্বাচন আহ্বান করে, তাহলে তারা নির্বাচন থেকে বিরত থাকতে পারে।

দলটির দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নতুন গণপরিষদ গঠন করে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। এ লক্ষ্যে ২০৩৫ ও ২০৪৭ সালের জন্য কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে দলের মূলনীতি ও কার্যক্রমের দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে।

 

জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির গঠন ও সদস্য তালিকা || National Citizen Party (NCP) Overview and Leadership

জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। দলটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব হিসেবে আখতার হোসেন দায়িত্ব পালন করবেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদবী ও সদস্যবৃন্দ:

  • আহ্বায়ক: নাহিদ ইসলাম
  • সদস্যসচিব: আখতার হোসেন
  • জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক: সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদিব
  • জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-সদস্যসচিব: তানসিম জারা, নাহিদা সরওয়ার নিভা
  • মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল): হাসনাত আবদুল্লাহ
  • মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল): সারজিস আলম
  • মুখ্য সমন্বয়কারী: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
  • সিনিয়র মুখ্য সমন্বয়কারী: আব্দুল হান্নান মাসউদ
  • যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়কারী: তারিকুল ইসলাম

যুগ্ম আহ্বায়করা:

নুসরাত তাবাসসুম, মনিরা শারমিন, মাহবুব আলম, সরোয়ার তুষার, মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন, তাসনুভা জেবিন, সুলতান মো. জাকারিয়া, আতিক মুজাহিদ, আশরাফ উদ্দিন মাহাদী, অর্পিতা শ্যামা দেব, তানজিল মাহমুদ, অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, জাবেদ নাসিম, এহতেশাম হক, হাসান আলী।

যুগ্ম সদস্যসচিবরা:

আব্দুল্লাহ আল আমিন, আরিফ সোহেল, রশিদুল ইসলাম রিফাত, মাহিন সরকার, নিজাম উদ্দিন, আকরাম হোসেন, এস এম সাইফ মোস্তাফিজ, সালেহ উদ্দিন সিফাত।

দপ্তর সংযুক্ত ব্যক্তিবর্গ:

আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, ফরিদ উদ্দিন, ফরহাদ আলম ভূঁইয়া, মিরাজ মিয়া, লুৎফর রহমান, মঈনুল ইসলাম তুহিন, মুশফিক-উস সালেহীন, জাহিদুল ইসলাম, তৌহিদুল ইসলাম মুসা, হুমায়ুরা নূর, মুশফিকুর রহমান জোভান, মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, সাগুফতা বুশরা মিশমা, আহনাফ সাঈদ খান, আবু সাঈদ মো. সুজাউদ্দিন, মীর আরশাদুল হক, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, তারেক রেজা, মশিউর রহমান, জয়নাল আবেদীন শিশির, মুনতাসির রহমান, গাজী সালাহউদ্দিন তানভীর, তামিম আহমেদ, তাহসিন রিয়াজ।

আঞ্চলিক সংগঠকরা:

  • দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক: মো. আতাউল্লাহ, ডা. মাহমুদা মিতু, মোল্লা রহমতউল্লাহ, এসএম শাহরিয়ার, জোবায়ের আরিফ।
  • উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক: সাইফুল্লাহ হায়দার, আলী নাসের খান, সাকিব মাহাদী, মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সাদিয়া ফারজানা দিনা, অলিক মৃ, হানিফ খান সজীব।

যুব সংগঠন (যুব উইং):

ডা. আবদুল আহাদ, দিলশানা পারুল, আবু হানিফ, আবদুস জাহির, মাজহারুল ইসলাম ফকির, গোলাম মুর্তুজা সেলিম, আশেকীন আলম, ডা. জাহিদুল বারী, কৈলাশ চন্দ্র দাস, ডিম্পালী ডেভিড রাজু, শাহ মঈনুদ্দিন, সাদ্দাম হোসেন।

জাতীয় নাগরিক পার্টির সংগঠন গঠনের মাধ্যমে তারা গণতান্ত্রিক, অংশগ্রহণমূলক ও কার্যকর নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে চায়। দলটি বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধি ও নেতাদের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পটভূমি: গঠন, ইতিহাস ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট || Background of the National Citizen Party (NCP): Formation, History & Political Context

২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের একটি অংশ সংগঠন থেকে বেরিয়ে এসে ২ অক্টোবর ২০২৩ সালে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি নামে নতুন একটি ছাত্রসংগঠন গঠন করে। ২০২৪ সালে দেশের বেশিরভাগ ছাত্রসংগঠনের সাথে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতারাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক একটি নির্দলীয় রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে যোগ দেন। এই আন্দোলনের মাধ্যমে তারা কোটা সংস্কার ও অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় এবং নেতৃত্ব প্রদান করে।

image Courtesy: বার্তা কন্ঠ

৫ আগস্ট ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের ফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন। এই ঘটনার পরপরই গুঞ্জন ওঠে যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা করছে। তবে ১৬ আগস্ট, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম স্পষ্ট করেন যে তাদের আপাতত দল গঠনের কোনো পরিকল্পনা নেই, বরং এক দফা দাবির ভিত্তিতে নতুন রাজনৈতিক কাঠামো বাস্তবায়নের দিকে মনোযোগী হওয়া হবে।

৮ সেপ্টেম্বর গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন এবং আমার বাংলাদেশ পার্টির নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠিত হয়, যার লক্ষ্য ছিল দেশ পুনর্গঠনের জন্য একটি কার্যকরী নীতিমালা তৈরি করা। এর কিছুদিন পর, ১৪ সেপ্টেম্বর গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। অনেকে মনে করেন যে এর নেতারা সরাসরি রাজনীতিতে প্রবেশ করতে চলেছেন। সংগঠনের ভেতরের সূত্রমতে, শীর্ষ নেতারা একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

২৫ অক্টোবর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক সারজিস আলম জানান, অভ্যুত্থানের পরপরই যদি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়, তবে তা দেশে বিভক্তির সৃষ্টি করতে পারে। তাই ভবিষ্যতে নতুন প্ল্যাটফর্ম ও ভিন্ন নামে দল গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে। একইভাবে, ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মিচেল মিলার-এর সঙ্গে এক আলোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ দল গঠনের গুঞ্জনকে ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেন এবং বলেন যে "এটি প্রচারমূলক তথ্য, এখন দল গঠনের সময় নয়।"

২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে সারজিস আলম মন্তব্য করেন যে দেশের রাজনীতিতে নতুন দলের প্রয়োজন রয়েছে এবং ছাত্রসমাজ চাইলে তারা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। একই মাসে, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পরও বিলুপ্ত হবে না; বরং নতুন দলের জন্য "প্রেশার গ্রুপ" হিসেবে কাজ করবে এবং উভয় সংগঠনের সদস্যরা ইচ্ছা করলে নতুন দলে যোগ দিতে পারবে।

২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রকাশিত জরিপে উল্লেখ করা হয় যে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নতুন ছাত্র-নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল প্রায় ৪০% ভোটারদের সমর্থন পেতে পারে। একই মাসে কিছু সূত্র থেকে জানা যায় যে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই নতুন রাজনৈতিক দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটবে, এবং এর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জানুয়ারির মধ্যে দেশের প্রতিটি থানায় কমিটি গঠন করা হবে।


বাংলাদেশে ছাত্রনেতাদের নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির আত্মপ্রকাশ

Faviconapnews.com

Bangladeshi students who led uprising that ousted ex-premier Sheikh Hasina form new political party

Faviconreuters.com

Bangladeshi students launch political party after ousting PM Hasina 

এছাড়াও প্রথম আলো, দৈনিক ইত্তেফাক, কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, যুগান্তর, সমকাল, নয়া দিগন্ত, সংবাদ, জনকণ্ঠ, ভোরের কাগজ, The Daily Star, The Business Standard, The Financial Express, Dhaka Tribune, New Age ইত্যাদি উৎস থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে । 

 

5.1k

common.author

819 common.followers

অনন্ত মহাকালে মোর যাত্রা অসীম মহাকাশের অন্তে

fbhn.all_comments

টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion