বাংলাদেশে নারী অধিকারমূহ
বাংলাদেশে নারী অধিকারের গুরুত্ব
বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক হলো নারী। সমাজের এই বৃহৎ অংশকে পিছনে ফেলে বা অধিকারবঞ্চিত করে কোনো অবস্থাতেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সমাজের নারী ও পুরুষকে এক গাড়ির দুটি চাকার সাথে তুলনা করেছেন। দুটি চাকা সমানতালে না চললে গাড়ি যেমন থেমে যাবে তেমনি সমাজের একটি অংশ (নারী) যদি পিছিয়ে থাকে তবে সমাজ উন্নয়নের চাকাও পিছিয়ে যাবে। নারী শুধু মা, বোন, কন্যা, ভাবি, চাচি, ফুফু, খালা, নানি, দাদিরই ভূমিকা পালন করেন না বরং পুরুষের পাশাপাশি সংসার পরিচালনার গুরুদায়িত্বও পালন করেন। এর অতিরিক্ত সন্তান লালন-পালনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজটিও নারীকেই করতে হয়। নারী শুধু গৃহস্থালি কর্মসম্পাদনে সনাতনী ভূমিকাই পালন করছেন না। বরং উপার্জনক্ষম কাজও করছেন।
গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প-কারখানা, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কোম্পানি, প্রকৌশল, চিকিৎসা, প্রতিরক্ষা সর্বত্রই তারা দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন। গোটা নারীসমাজকে যদি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, চলাফেরা, মত প্রকাশের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় তবে তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। এতে পরিবার, সমাজ ও দেশের উন্নয়ন হবে এবং নারীরা মর্যাদাসম্পন্ন মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবে। তারা পরিবার ও সমাজের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে রাষ্ট্রগঠনে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
কাজেই দেশসেবা, তথা রাষ্ট্র ও বিশ্বের কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য নারী অধিকার একান্ত অপরিহার্য। নারীর অধিকার সংরক্ষণ ও সর্বক্ষেত্রে তাকে অগ্রগামী হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্যই নারী অধিকারের বিষয়টি আজ এতবেশি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। একজন শিক্ষিত, স্বাবলম্বী ও সচেতন নারী ঘরে এবং বাইরে উভয় ক্ষেত্রে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে পারে। আর এ জন্য নারীরা যাতে তাদের অধিকারগুলো পরিপূর্ণরূপে ভোগ করতে পারে এবং নিজেদেরকে সুষ্ঠুভাবে গড়ে তুলতে পারে সেজন্য নারী অধিকারের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফরাসি সেনাপতি ও রাষ্ট্রনায়ক নেপোলিয়ন বোনাপার্ট নারী অধিকারের বিষয়টি তাঁর একটি বিখ্যাত উক্তির মাধ্যমে বুঝাতে চেয়ে তিনি বলেছেন, 'আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদেরকে একটি সভ্য, শিক্ষিত জাতি উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিব।' এ থেকেই আমরা নারী অধিকারের গুরুত্ব বুঝতে পারি।
কাজ: বাংলাদেশে নারী অধিকারসমূহ লিখ। |
common.read_more