পোল অ্যান্ড শিয়ার ও ফিগার অব এইট ল্যাশিং (পাঠ ৪)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য স্কাউটিং ও গার্ল গাইডিং | - | NCTB BOOK
97
97

পোল অ্যান্ড শিয়ার ল্যাশিং (Pole and Shear Lashing): পোল অ্যান্ড শিয়ার ল্যাশিংকে অনেকে শুধু শিয়ার
ল্যাশিং বলে। দুটি বাঁশ বা কাঠকে একত্রে বাঁধার জন্য যেপেঁচ দেওয়া হয়, তাকে পোল অ্যান্ড শিয়ার ল্যাশিং বলে। দুটি বাঁশ বা দন্ডকে একত্রে বেঁধে তাকে পারা হিসেবে ব্যবহার করার জন্য অথবা একটি বাঁশ বা দণ্ডকে অপর একটি বাঁশ বা দন্ডের সাথে বেঁধে তাকে লম্বা করার জন্য এই ল্যাশিং ব্যবহার করা হয়। যখন দুটি বাঁশ বা দন্ডকে মাথার দিকে একত্রে বেঁধে তাকে পায়া হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তখন তাকে শিয়ার লেগ বলে। যখন একটি বাঁশ বা দন্ডকে অপর একটি বাঁশ বা দণ্ডের সাথে একত্রে বেঁধে লম্বা করা হয় তখন তাকে পোল বলে। মূলত শিয়ার লেগ এবং পোল তৈরির জন্য একই ল্যাশিং ব্যবহার করা হয়। শিয়ার লেগ ও পোল করার জন্য একই ল্যাশিং ব্যবহার করা হলেও এদের মধ্যে পার্থক্য আছে। যেমন- শিয়ার লেগ তৈরির জন্য ফ্রাপিং দিতে হয়। আর পোল তৈরির জন্য ফ্রাপিং দিতে হয় না। কীভাবে পোল তৈরি ও শিয়ার লেগ তৈরি করা হয় তা নিম্নে পৃথকভাবে দেওয়া হলো-

পোল তৈরি : একটি দণ্ডের মাথায় ২০ সে:মি: নিচে অপর একটি দন্ডের নিচের অংশ রেখে দন্ডকে আগের দন্ডের পাশাপাশি রেখে নিচে রাখা দন্ডটি, যেখানে ওপরের দন্ডের সাথে মিলিত হয়েছে, তার ৪/৫ সে:মি: ওপরে দুটি দন্ডকে একত্রিত করে সেখানে দড়ির স্থির অংশ দিয়ে বড়শি গেরো বাঁধতে হবে। বড়শি গেরো বাঁধার পর দড়ির স্থিরপ্রান্তের যে বাড়তি অংশ থেকে যাবে, তাকে দড়ির চলমান অংশের সাথে পেঁচিয়ে দিতে হবে। তারপর চলমান অংশ দিয়ে দুটি দণ্ড একত্র করে নিচের দিক থেকে উপরের দিকে পেঁচ দিতে হবে। ৮/১০ বার পেঁচ দেওয়া হয়ে গেলে দণ্ডকে একত্র করে বড়শি গেরো দিয়ে ল্যাশিং শেষ করতে হবে। দুটি দপ্ত যেখানে পরস্পরের সাথে মিলিত হয়েছে, সেখানে আলাদা আলাদা ল্যাশিং দিলে সুবিধা হয় এবং বাঁধন খুব শক্ত হয়। দণ্ড কোনো দিকে হেলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এভাবে পোল তৈরির জন্য পোল ল্যাশিং বাঁধতে হয়।

শিয়ার লেগ তৈরি: দুটি বাঁশ বা দণ্ডের নিচের অংশ সমান্তরাল রেখায় রেখে দুটি দণ্ডকে একত্র করে ওপরের যেকোনো দণ্ডে দড়ির স্থির প্রান্ত দিয়ে একটি বড়শি গেরো দিতে হবে। বড়শি গেরো দেওয়ার পর দড়ির স্থিরপ্রান্তের বাড়তি অংশ থেকে যাবে, তাকে দড়ির চলমান অংশের সাথে পেঁচিয়ে দিতে হবে। এবার দড়ির চলমান অংশ দিয়ে দুটি দণ্ডকে একত্র করে পেঁচিয়ে নিচ থেকে ওপরের দিকে যেতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে যে দুটি দণ্ডের সাথে পেঁচ দেওয়ার সময় একটি দড়ির সাথে যেন আরেকটি দড়ি লেগে থাকে। একটি দড়ি যেন আর একটি দড়ির উপর না ওঠে। ৮/১০ বার পেঁচ দেওয়া শেষ হলে দুই দণ্ডের মাঝখানে দড়ির যে অংশ আছে, তাকে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে শক্ত করে অন্তত পক্ষে ৪/৫ বার পেঁচ দিতে হবে। দুই দন্ডের মাঝখানের দড়িকে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে পেঁচানোকে ফ্রাপিং (Frapping) বলে।

ফ্রাপিং যত মজবুত হবে ল্যাশিং তত শক্ত হবে। ফ্রাপিং দেওয়া শেষ হলে প্রথমে যে দণ্ডে বড়শি গেরো দিয়ে ল্যাশিং শুরু করেছিল তার বিপরীত দণ্ডে বড়শি গেরো দিয়ে ল্যাশিং শেষ করতে হবে। এভাবে শিয়ার লেগ তৈরি করা হয়।

ফিগার অব এইট ল্যাশিং (Figure of Eight Lashing): তিনটি দণ্ডের নিচের অংশকে একই সমান্তরাল রেখায় রেখে দন্ড তিনটিকে একটির পাশে আর একটি রাখতে হবে। দণ্ড তিনটি খুব কাছাকাছি থাকবে। যেকোনো দুটি দণ্ডকে বড়শি গেরো দিয়ে বাঁধতে হবে। বড়শি গেরোর মাথা যেন দণ্ডের উপর

থাকে। বড়শি গেরো বাঁধার পর দড়ির স্থির প্রান্তের যে বাড়তি অংশ থেকে যাবে, তাকে দড়ির চলমান অংশকে একটি দণ্ড বাদ দিয়ে পরবর্তী দণ্ডকে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে নিচ থেকে উপরের দিকে যেতে হবে। কমপক্ষে ৫/৭বার দড়ি পেঁচানো শেষ হলে যে দণ্ডের সাথে প্রথম বড়শি গেরো বাঁধা হয়েছিল সে দণ্ডের পার্শ্ববর্তী দণ্ডের মাঝখানে দড়ির যে অংশ আছে সে দড়িকে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে প্রথমে কমপক্ষে তিনবার পেঁচ দিতে হবে।

পরবর্তীতে পাশের দুই দন্ডের মাঝখানে দড়ির যে অংশ আছে তাকে আবার আগের মতো করে পেঁচ দিতে হবে। এভাবে দড়ির উপর দড়ি দিয়ে পেঁচ দেওয়াকে ফ্রাপিং বলে। ফ্রাপিং যত শক্ত হবে, ল্যাশিং তত মজবুত হবে। ফ্রাপিং দেওয়া শেষ হলে বড়শি গেরো দিয়ে ল্যাশিং শেষ করতে হবে। তিনটি দণ্ড বা বাঁশকে একত্রে বেঁধে ট্রিপট তৈরি করার জন্য ফিগার অব এইট ল্যাশিং ব্যবহার করা হয়।

কাজ-১: পোল অ্যান্ড শিয়ার ল্যাশিং ও ফিগার অব এইট ল্যাশিং তৈরি করে দেখাও।
common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion