ডান পাটা মাটি থেকে এক বিঘত ওঠে, তার বেশি ওঠে না। কুমু তা হলে চলে কী করে?
মাসিরা মাকে বললেন- "কিচ্ছু ভাবিসনে, রোগ তো সেরেই গেছে, এখন ওকে ঝাড়া তিন মাস সোনাঝুরিতে মার কাছে রেখে দে, দেখিস কেমন চাঙ্গা হয়ে উঠবে।"
বাবাও তাই বললেন, "বাঃ, তবে আর ভাবনা কী, কুমু? তা ছাড়া ওখানে ওই লাটু বলে মজার ছেলেটা আছে, হেসে খেলে তোর দিন কেটে যাবে।"
কিন্তু পড়া? কুমু যে পড়ায় বড়ো ভালো ছিল। তা তিন মাস গেছে শুয়ে শুয়ে, তিন মাস গেছে পায়ে লোহার ফ্রেম বেঁধে হাঁটতে শিখে। আরও তিন মাস যদি যায় দিদিমার বাড়িতে, তবে পড়া সব ভুলে যাবে না?
মা বললেন, "পড়ার জন্য অত ভাবনা কীসের? লাটুর বাড়ির মাস্টার তোমাকেও পড়াবেন।"
মাসিরা বললেন, "বেঁচে উঠেছিস এই যথেষ্ট, তা না হয় একটা বছর ক্ষতিই হলো, তাতে কী এমন অসুবিধেটা হবে শুনি?"
হাসি, রত্না সবাই ওপরের ক্লাসে উঠে যাবে, কুমু পড়ে থাকবে, ভাবলেও কান্না পায়। কুমুর চোখ ঝাপসা হয়ে আসে।
সোনাঝুরিতে দিম্মার বাড়ির দোতলার বড়ো ঘরে, মস্ত জানালার ধারে আরামচেয়ারে বসে বসে চেয়ে দেখে দূরে একটা বিল, সেখানে হাজার হাজার বৃষ্টির জলের ফোঁটা পড়ছে আর অমনি বিলের জলে মিশে যাচ্ছে। আস্তে আস্তে পাটা আবার একটু তুলতে চেষ্টা করে কুমু।
সন্ধে হয়ে আসছে, বৃষ্টি থেমে গেছে, বিলের জল সাদা চকচক করছে।
আকাশ থেকে হঠাৎ ছায়ার মতো কী বিলের ওপর নেমে এল। কুমু দেখে ঝাঁকে ঝাঁকে সাদা ফিকে ছাই রঙের বুনো হাঁস ঝুপঝাপ করে জলে নামছে।
এক ছড়া কী যেন সাদা ফুল হাতে নিয়ে লাটু এসে বলল, "ওই দেখ, বুনোহাঁসরা আবার এসেছে।
শিকারিদের কী মজা! ইস, আমার যদি একটা এয়ারগান থাকত।"
কুমু বলল, "বন্দুক নেই ভালোই হয়েছে। অমন সুন্দর পাখিও মারতে ইচ্ছে করে!"
দিম্মাও তখন ঘরে এসে বললেন, "হ্যাঁ, ওদের ওই এক চিন্তা!"
কুমু বলল, "কোথেকে এসেছে ওরা?"
"যেই শীত পড়ে অমনি উত্তরের ঠান্ডা দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসে, বাঁধের কাছে দু-তিন দিন বিশ্রাম করে, তারপর আবার দক্ষিণ দিকে উড়ে যায়, শোনা যায় নাকি সমুদ্রের ওপর দিয়ে আন্দামান অবধি উড়ে যায় কেউ কেউ।”
লাটু কাছে এসে ফুলটা কুমুর খাটে রেখে বলল-"আবার শীতের শেষে ঝাঁকে ঝাঁকে সব ফিরে আসে, সেকথা তো বললে না ঠাকুরমা?"
লাটুর কথার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে দূরে দুম দুম করে বন্দুকের গুলির শব্দ হলো, আর বুনোহাঁসের ঝাঁক জল ছেড়ে আকাশে উড়ে খুব খানিকটা ডাকাডাকি করে আবার জলে নামল।
পরদিন সকালে জানালা খুলে, পর্দা টেনে দিম্মা চলে গেলে, কুমু জানালা দিয়ে চেয়ে দেখে লেবু গাছের পাতার আড়ালে, ডাল ঘেঁষে কোনোমতে আঁকড়ে-পাকড়ে বসে রয়েছে ছোট একটা ছাই রঙের বুনোহাঁস। সরু লম্বা কালো ঠোঁট দুটো একটু হাঁ করে রয়েছে, পা দুটো একসঙ্গে জড়ো করা, বুকের রঙটা প্রায় সাদা, চোখ দুটো একেবারে কুমুর চোখের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে রয়েছে, কালো মখমলের মতো দুটো চোখ। একদিকের ডানা একটু ঝুলে রয়েছে, খানিকটা রক্ত জমে রয়েছে, সমস্ত শরীরটা থরথর করে কাঁপছে।
পাখিটাকে দেখে কুমুর গলার ভেতরে টনটন করতে থাকে; হাত বাড়িয়ে বলে, "তোমার কোনো ভয় নেই, কোনো ভয় নেই।" পাখিটা চোখ বন্ধ করে, আবার খোলে। আর একটু ডাল ঘেঁষে বসে।
লাটু কুমুর কাঁধের ওপর দিয়ে উঁকি মেরে পাখিটাকে দেখতে পায়। "ইস! ডানায় গুলি লেগেছে বেচারার। চুন হলুদ দিয়ে বেঁধে দিলে সেরেও যেতে পারে। বলিস তো ধরে আনি।"
কুমু বলল, "কিন্তু দিম্মা কী বলবেন?"
"কী আবার বলবেন? বলবেন ছি, ছি, ছি, নোংরা জিনিস ফেলে দে, ওসব কি বাঁচে!"
কুমু জোর গলায় বলল, "নিশ্চয় বাঁচে, চুন হলুদ দিয়ে ডানা বেঁধে, গরম জায়গায় রাখলে নিশ্চয় বাঁচে।"
লাটু বলল, "কোন গরম জায়গায়?"
"কেন আমার বিছানায়, লেপের মধ্যে।"
"দেখিস, কেউ যেন টের না পায়।"
"কী করে টের পাবে, আমার বিছানা তো আমি নিজে করি। ডাক্তার আমাকে হাত-পা চালাতে বলেছে যে। আচ্ছা, ধরতে গেলে উড়ে পালাবে না তো?"
"তোর যেমন বুদ্ধি। এক ডানায় ওড়া যায় নাকি?"
"কী খাবে ও লাটু?"
লাটু ভেবে পায় না খাটের মধ্যে বিছানার ভিতরে কী খাওয়াবে ওকে। না খেয়ে যদি মরে যায়!
"এক কাজ করলে হয় না রে কুমু? ঝুড়ি দিয়ে, লেবু গাছের ডালে ওর জন্য একটা বাসা বেঁধে দিই, তা হলে ভাঙা ডানা নিয়ে আর পড়ে যাবে না, নিজেই পোকামাকড় ধরে খাবে।"
নিমেষের মধ্যে ঝুড়ি নিয়ে লাটু জানালা গলে একেবারে লেবু গাছের ডালে। ভয়ের চোটে পাখিটা পড়ে যায় আর কী! লাটু তাকে খপ করে ধরে ফেলে, কিন্তু কী তার ডানা ঝটপটানি, ঠুকরে ঠুকরে লাটুর হাত থেকে রক্ত বের করে দিল। লাটু দড়ি দিয়ে শক্ত করে ঝুড়ি বেঁধে পাখিটাকে আস্তে আস্তে তার মধ্যে বসিয়ে দিল। অমনি পাখিটা আধমরার মতো চোখ বুঁজে ভালো ডানাটার মধ্যে ঠোঁট গুঁজে দিল।
লাটু সে জায়গাটাতে নিজের পা কাটার সময়কার হলদে মলম লাগিয়ে দিয়ে আবার জানালা গলে ঘরে এল। বলল, "ঠাকুরমার কাছে যেন আবার বলিস না। বলবেন হয়তো, ছুঁস না ওটাকে।"
কুমু হাঁটতে পারে না ভালো করে, পাখিটাও উড়তে পারে না। পারলে নিশ্চয় ওই দূরে বিলে ওর বন্ধুদের কাছে চলে যেত। গাছের ডালে ঝুড়িতে ডানায় মুখ গুঁজে চুপ করে পড়ে থাকত না। কুমুর পা ভালো হলে কুমুও এখানে থাকত না। মার কাছে থাকত, রোজ ইস্কুলে যেত, সন্ধেবেলায় সাঁতার শিখত, দৌড় খেলার জন্য রোজ অভ্যাস করত। আর কোনোদিনও হয়তো কুমু দৌড়াতে পারবে না। কিছুতেই আর পায়ে জোর পায় না, মাটি থেকে ওই এক বিঘতের বেশি তুলতে পারে না। মনে হয় অন্য পাটার চেয়ে একটা একটু ছোটো হয়ে গেছে।
আর একবার জানালার কাছে গিয়ে পাখিটাকে দেখে ভালো করে, ও ডানাটাকে যে নাড়া যায় না সে বিষয়ে কোনোই সন্দেহ নেই। পাখিটা ঝুড়িতে বসে আস্তে আস্তে কালো ঠোঁট দিয়ে বুকের পালক পরিষ্কার করছে। তারপর কিছুক্ষণ ঠোঁটে ভর দিয়ে চুপ করে চোখ বুঁজে পড়ে থাকল; তারপর আবার চোখ খুলে গাছের ডাল থেকে কী একটা খুঁটে খেল।
কুমু বালিশের তলা থেকে ছোট্ট বিস্কুটের বাক্স থেকে একটুখানি বিস্কুট ছুড়ে দিল। পাখিটাও অমনি যেন পাথর হয়ে জমে গেল। বিস্কুটের দিকে ফিরেও চাইল না। কুমু আবার খাটে এসে বসল, নতুন গল্পের বইটা পড়তে চেষ্টা করল। পনেরো মিনিট বাদে আর একবার জানালা দিয়ে উঁকি মারল। বুকের পালক পরিষ্কার করতে করতে পাখিটা আবার কী একটা খুঁটে খেল।
গাছের ডালে পাখিটা একটু নড়ছে, একটু শব্দ হচ্ছে, কুমু ভয়ে কাঠ, এই বুঝি দিম্মা দেখতে পেয়ে মঙ্গলকে বলেন, “ফেলে দে ওটাকে, বড়ো নোংরা, ঝুড়ি খুলে আন, ওটা কে বেঁধেছে ওখানে?”
কুমু জানালা দিয়ে চেয়ে দেখে পাখিটা ঘুমিয়ে আছে। কুমুও বই নিয়ে বিছানায় গিয়ে শুল। হঠাৎ জানালার বাইরে শোরগোল। চমকে উঠে দেখে একটা হলদে বেড়াল গাছের ডালে গিয়ে উঠছে। কুমু ভয়ে কাঠ; এই বুঝি বেড়াল পাখিটা খেল। কিন্তু খাবে কী, অত বড়ো পাখি তার তেজ কত! দিলো ঠুকরে ঠেলে ভাগিয়ে। দুটো কাক দূর থেকে মজা দেখল, কাছে ঘেঁষতে সাহস পেল না।
কুমু সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে এ মাথা থেকে ও মাথা হেঁটে বেড়াতে লাগল, খোঁড়া তো হয়েছে কী, এইরকম করে হাঁটলেই না পায়ের জোর বাড়বে। দু-বার হেঁটে কুমু এসে যখন খাটে বসল, পা দুটোতে ব্যথা ধরে গেছে কিন্তু মনে হচ্ছে যেন ডান পাটা এক বিঘতের চেয়ে একটু বেশিই তোলা যাচ্ছে।
এমনি করে দিন যায়, বুনো হাঁসের ডানা আস্তে আস্তে সারতে থাকে। দু-দিন পরে পাখির ঝাঁক বিল থেকে দক্ষিণ দিকে উড়ে গেল। গাছের ডালে বসে পাখিটা একটা ডানা ঝাপটাতে লাগল। উড়বার জন্য কী যে তার চেষ্টা! কিন্তু ভাঙা ডানা ভর সইবে কেন, হাঁসটা ঝুড়ি থেকে পিছলে পড়ে নিচের ডালের ফাঁকে আটকে থাকল। লাটু তখনও স্কুল থেকে ফেরেনি, কুমু করে কী! জানালার ধারে দাঁড়িয়ে একদৃষ্টে চেয়ে থাকল, পাখিটা অনেকক্ষণ অসাড় হয়ে ঝুলে থাকার পর আঁচড়ে-পাঁচড়ে নিজেই সেই ডালটার উপর চড়ে বসল। লাটু ফিরে এসে আবার ওকে তুলে ঝুড়িতে বসিয়ে দিল। ঠোকরালও একটু সে, তবে তেমন কিছু নয়, ডানায় আবার ওষুধ লাগিয়ে দিল লাটু।
এমনি করে দিন যায়, রোজ পাখিটা একটু করে সেরে ওঠে, ঝুড়ি থেকে ডালে নামে। আর আনন্দের চোটে কুমুও ঘরময় হেঁটে বেড়ায়, নিজের বিছানা নিজে পাতে, নিজে স্নান করে, জামা কাচে। দুপুরবেলা এক ঘুম দিয়ে উঠে নিজে বসে অঙ্ক কষে। বাড়িতে চিঠি লেখে, "মা-বাবা, তোমরা ভেবো না, আমি রোজ রোজ সেরে উঠছি, রত্নাদের বলো আমি পরীক্ষা দেব।"
এমনি করে এক মাস কাটল। তার মধ্যে একদিন খুব বৃষ্টি হয়েছিল। পাখিটা ঝুড়ির তলার গাছের ডালের আড়ালে গিয়ে লুকাল। তারপর বৃষ্টি থেমে আবার যখন রোদ উঠল, পাখিটা দিব্যি ডানা মেলে পালক শুকোল। কুমু অবাক হয়ে দেখল ডানা সেরে গেছে।
তার দু-দিন পরে দুপুরে মাথার অনেক ওপর দিয়ে মস্ত এক ঝাঁক বুনো হাঁস তীরের মতো নকশা করে উড়ে গেল। কুমুর পাখিও হঠাৎ কী মনে করে ডাল ছেড়ে অনেকখানি উঁচুতে উড়ে গেল, কিন্তু তখুনি আবার নেমে এসে মগডালে বসল। হাঁসরাও নামল। পাখিটা সেই দিকেই চেয়ে থাকল।
সারারাত বুনোহাঁসরা বিশ্রাম করে পরদিন সকালে যখন দল বেঁধে আকাশে উড়ল, কুমুর পাখিও তাদের সঙ্গ নিল। দল থেকে অনেকটা পেছিয়ে থাকল বটে, কিন্তু ক্রমাগত যেরকম উড়তে লাগল, কুমু লাটুর মনে কোনো সন্দেহ রইল না, এখুনি ওদের ধরে ফেলবে।
সে বিকেলে কুমু নিজে হেঁটে নিচে নামল, ডান পা-টা যেন একটু ছোটোই মনে হলো।
কুমু বলল, "দিম্মা, পাটা একটু ছোটো হলেও কিছু হবে না, আমি বেশ ভালো চলতে পারি। বুনো হাঁসটারও একটা ডানা একটু ছোটো হয়ে গেছে।"
শুনে দিম্মা তো অবাক! তখন লাটু আর কুমু দুজনে মিলে দিম্মাকে পাখির গল্প বলল। দিম্মা কুমুর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, “ওমা, বলিসনি কেন, আমিও যে পাখি ভালোবাসি।”
দিম্মা - এখানে দিদিমাকে 'দিম্মা' বলে সম্বোধন করা হয়েছে।
এক ছড়া - এক গুচ্ছ।
আন্দামান - ভারত মহাসাগরে অবস্থিত ভারতের একটি দ্বীপাঞ্চল। সমুদ্রবেষ্টিত এ অঞ্চল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত।
অবধি - পর্যন্ত।
একদৃষ্টে - এক দৃষ্টিতে, অর্থাৎ চোখের পলক না ফেলে।
নিমেষ - মুহূর্ত।
বিঘত - আধা হাত পরিমাণ।
শোরগোল - চিৎকার, চেঁচামেচি।
আঁচড়ে-পাঁচড়ে - অনেক চেষ্টা করে।
মগডাল - উপরের ডাল।
'পাখি' গল্পটি লীলা মজুমদারের 'চিরকালের সেরা' গল্প-সংকলন থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। গল্পের কিশোরী কুমু অসুস্থ হলে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে পরিবার। সহপাঠীরা সবাই উপরের ক্লাসে উঠে যাবে, কুমু নিচের ক্লাসে পড়ে থাকবে এই নিয়ে কুমুর ভাবনার শেষ নেই। দ্রুত সুস্থতার জন্য কুমু সোনাঝুরিতে দিদিমার দোতলা বাড়ির উন্মুক্ত পরিবেশে এলে একটি অভূতপূর্ব ঘটনার সম্মুখীন হয়।
শিকারির বন্দুকের গুলির আঘাতে একটি বুনোহাঁস আহত হলে কুমু তার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। পাখিটিকে সুস্থ করে তোলার জন্য সে ব্যাকুল হয়ে ওঠে। সমবয়সী কিশোর লাটুর সহযোগিতা নিয়ে কুমু পাখিটাকে সকল বিপদ থেকে বাঁচতে এবং দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করে। গল্পটির একটি অসাধারণ দিক হচ্ছে পাখিটির সেরে ওঠার প্রতিটি ধাপ থেকে কুমু নিজেও সুস্থ হবার প্রেরণা পায়। পাখিটির প্রতি দুজন কিশোর-কিশোরীর অকৃত্রিম মমত্ববোধ ও সমবেদনা গল্পটিকে এক অনন্য মাত্রায় উন্নীত করেছে।
লীলা মজুমদার ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার বিখ্যাত রায় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আদি পৈতৃক নিবাস বৃহত্তর ময়মনসিংহে। তিনি শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ভাইঝি। শিশু-কিশোরদের জন্য লিখেছেন গল্প, উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধ। তাঁর লেখা বিখ্যাত কিছু বই: 'হলদে পাখির পালক', 'দিনদুপুরে', 'বদ্যিনাথের বড়ি' 'গুপির গুপ্তখাতা'। আকাশ-ছোঁয়া কল্পনা, নির্মল হাস্য-কৌতুক এবং গল্প বলার ঢঙের কারণে শিশু-কিশোর সাহিত্যে তিনি এক ঈর্ষণীয় আসন তৈরি করেছেন। ২০০৭ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
ক. তোমার পছন্দের প্রাণীসমূহের তালিকা কর।
খ. বিভিন্ন সময় মানুষেরা কোন কোন প্রাণীর প্রতি কী ধরনের বিরূপ আচরণ করে থাকে?
গ. প্রাণীদের প্রতি উপযুক্ত মমত্ববোধ দেখানোর জন্য আমাদের আচরণে কী কী পরিবর্তন আনা উচিত?
১. কুমুর ধারণা অনুযায়ী দিদিমা কাকে পাখিটি ফেলে দিতে বলবেন -
ক. মা
খ. মঙ্গল
গ. লাটু
ঘ. মাসিমা
২. লাটু পাখিটির ডানায় চুন-হলুদ বেঁধে দেয়। কারণ এটি -
i. ক্ষত স্থানের জন্য উপকারী
ii. পাখিটির ডানা রঙিন করবে
iii. গ্রামীণ চিকিৎসা পদ্ধতি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. iও ii
খ. ii ও iii
গ. i ও iii
ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
কবুতর পোষার শখ কামালের। শুরুতে এক জোড়া কবুতর সে খাঁচাতেই পুষত। বলতে গেলে একসময় এটা নেশায় দাঁড়িয়ে যায়। তাই কবুতরের আরামদায়ক বসবাসের জন্য কাঠের খোপ বানিয়ে দেওয়ালে টানিয়ে দিয়েছে কামাল। এখন তার পাঁচ জোড়া কবুতর।
৩. উদ্দীপকে 'পাখি' গল্পের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে?
ক. পাখি পোষার শখ
খ. পাখির প্রতি মমত্ববোধ
গ. পাখির প্রতি সমবেদনা
ঘ. পাখির পরিচর্যার ব্যবস্থা
8. উক্ত প্রতিফলিত দিকটি 'পাখি' গল্পের কোন চরিত্রসমূহে বিদ্যমান?
i. মা-দিদিমা
ii. কুমু-লাটু
iii. লাটু-দিদিমা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. ii ও iii
গ. i ও iii
ঘ. i, ii ও iii
১. সহপাঠীদের সাথে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে একটি বিড়াল ছানার করুণ ডাক শুনে থমকে দাঁড়ায় শ্রেয়সী। হঠাৎ দেখে রাস্তার পাশে একটি গর্তে একটি বিড়াল ছানা আটকে আছে। বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে শ্রেয়সী সেটিকে পরিষ্কার করে কোলে তুলে নেয়। বাড়িতে ফেরার পর শ্রেয়সীর সেবা-যত্নে বিড়াল ছানাটি যেন প্রাণ ফিরে পেল। খুব অল্প সময়ে সে তাদের পরিবারেরই একজন হয়ে উঠল। কিন্তু ওর ভাই সুজা তাকে সহ্য করতে পারত না, প্রায়ই মারধর করত। একদিন শ্রেয়সী স্কুল থেকে ফিরে বিড়াল ছানাটিকে আর খুঁজে পেল না।
ক. হাঁসরা গিয়ে কোথায় নামল?
খ. কুমু-লাটুর মনে কোনো সন্দেহ রইল না কেন?
গ. শ্রেয়সীর মাধ্যমে 'পাখি' গল্পের কোন বিশেষ দিকটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে?-ব্যাখ্যা কর।
ঘ. 'সুজার মানসিকতা কুমু বা লাটুর মতো হলে বিড়াল ছানাটিকে হারাতে হতো না শ্রেয়সীর।'- বিশ্লেষণ কর।
common.read_more