পাইওনিয়ারিং, ল্যাশিং ও টেন্ডারফুট গিরা (পাঠ ৩)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য স্কাউটিং ও গার্ল গাইডিং | - | NCTB BOOK
185
185

ক) পাইওনিয়ারিং: স্কাউটিং ও গার্ল গাইডিং-এ হাইকিং করার সময় তাঁবুবাসকালে দড়ির বিভিন্ন গেরো সম্পর্কে জানা ও বাস্তবে প্রয়োগ করাকে পাইওনিয়ারিং বলে। যেমন-

১) দড়ির বিভিন্ন অংশের নাম জানা ও চিহ্নিত করতে পারা।

২) দড়ির সাহায্যেও নিম্নলিখিত গেরোগুলো বাঁধতে এবং এগুলোর সঠিক ব্যবহার প্রদর্শন করতে পারবে। যেমন: বোলাইন অন দি বাইট, ক্যাটসপ, ডবল শিটবেন্ড, স্লিপারি শিটবেন্ড, ফায়ার ম্যান চেয়ার নট ইত্যাদি।

৩) সঠিক প্যাঁচের সাহায্যে চারটি লাঠি দিয়ে একটা পতাকা দন্ড তৈরি করতে পারা।

৪) সঠিক প্যাচের সাহায্যে একটা শিয়ার লেগ তৈরি করতে পারা।

গ্যাজেট: তাঁবুতে বসবাসের জন্য গাছের ডাল বা বাঁশ দিয়ে তৈরি আসবাবপত্র রাখার ব্যবস্থাকে গ্যাজেট বলে।

খ) ল্যাশিং: দু-তিনটা বাঁশ বা কাঠকে একত্রে বাঁধার জন্য দড়ি দিয়ে পেঁচিয়ে বাঁধাকে ল্যাশিং বলে। সাধারণত পুল, ঘর, মাচা, গ্যাজেট তৈরি ও গাছে ঠেকা দেওয়ার সময় ল্যাশিং ব্যবহার করা হয়। ল্যাশিং অনেক প্রকার থাকলেও স্কাউটদের প্রাথমিক পর্যায়ে চার প্রকার ল্যাশিংয়ের প্রয়োজন হয়। যথা-
১। স্কোয়ার ল্যাশিং (Square Lashing) |
২। ডায়াগোনাল ল্যাশিং (Diagonal Lashing) |
৩। পোল এন্ড শিয়ার ল্যাশিং (Pole and Sheer Lashing)।
৪। ফিগার অব এইট ল্যাশিং (Figure of Eight Lashing)।

স্কোয়ার ল্যাশিং (Square Lashing): একটি বাঁশের উপর আরেকটি বাঁশ আড়াআড়িভাবে রেখে শক্ত করে বাঁধার জন্য যে পেঁচ দেওয়া হয়, তাকে স্কোয়ার ল্যাশিং বলে। একটি বাঁশ মাটির ওপর খাড়াভাবে রেখে অপর একটি বাঁশের টুকরা ঐ বাঁশের উপর আড়াআড়ি রাখতে হবে। যে বাঁশটি খাড়াভাবে আছে, সেটি হচ্ছে পোল এবং যে বাঁশটি আড়াআড়িভাবে রাখা হয়েছে, সেটি হচ্ছে বার। এবার পোল এবং বার যেখানে মিলিত হয়েছে, সেখানে একটি বড়শি গেরো দিয়ে ঐ দড়ির চলমান অংশকে বারের উপর দিয়ে পোলকে পেছন দিক থেকে পেঁচিয়ে আবার বারের উপর রাখতে হবে। এভাবে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে ৮/১০ বার পোল এবং বারকে জড়িয়ে পেঁচ দিতে হবে। পোল পেঁচানোর সময় দড়ি পোলের নিচে এবং উপরের প্রথমে যে দুটি পেঁচ দেওয়া হয়েছিল, পরবর্তী পেঁচগুলো দুটির মধ্যে দিতে হবে। যাতে আস্তে আস্তে পোলের এই অংশের ফাঁক বন্ধ হয়ে যায়। পোল এবং বার ৮/১০ বার পেঁচানো শেষ হলে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে পোল এবং বারের মাঝে যে দড়ি আছে, তাকে শক্ত করে অন্ততপক্ষে ৩/৪ বার পেঁচাতে হবে। এই পেঁচানোকে ফ্রাপিং (Frapping) বলে।

স্কোয়ার ল্যাশিং

ফ্রাপিং যত শক্ত হবে, ল্যাশিং তত মজবুত হবে। ফ্রাপিং দেওয়া শেষহলে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে বারে বড়শি গেরো দিয়ে বেঁধে ল্যাশিং শেষ করতে হবে। এভাবে স্কোয়ার ল্যাশিং বাঁধতে হয়।

ডায়াগোনাল ল্যাশিং (Diagonal Lashing): একটি দণ্ডকে অপর একটি দন্ডের উপর কোনাকুনিভাবে বা গুণন চিহ্নের (×) মতো অবস্থায় রাখতে হবে। এভাবে রাখার ফলে দুটি দন্ড যেখানে একত্রিত হয়েছে, সেখানে একটি গাড়ি টানা গেরো দিতে হবে।

দড়ির চলমান অংশের দিক পরিবর্তন করে বাইরের দিক দিয়ে দুই দন্ডকে একত্রে ৫/৭ বার পেঁচাতে হবে। এরপর যে দিক থেকে আগে পেঁচানো হয়েছে তার বিপরীত দিক থেকে দুই দণ্ডকে একত্রিত করে আগের মতো ৫/৭ বার পেঁচ দিতে হবে। এভাবে দুই দিক দিয়ে পেঁচানো শেষ হলে দন্ডের মাঝে দড়ির যে অংশ আছে, তাকে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে শক্ত করে অন্ততপক্ষে ৩/৪ বার পেঁচ দিতে হবে। এই পেঁচ যত শক্ত হবে ল্যাশিং তত মজবুত হবে। ফ্রাপিং দেওয়া শেষ হলে যেকোনো একটি দণ্ডের সাথে দড়ির চলমান অংশের দ্বারা বড়শি গেরো দিয়ে ল্যাশিং শেষ করতে হবে। এভাবে ডায়াগোনাল ল্যাশিং বাঁধতে হয়।

কাজ-১: স্কোয়ার ল্যাশিং ও ডায়াগোনাল ল্যাশিং বেঁধে প্রদর্শন কর।
common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion