তোমরা জানো যে বায়ুমন্ডলে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাসের পরিমাণে একটা ভারসাম্য বজায় থাকে। পরিবেশে বিশেষ করে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের ভারসাম্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ দুটি গ্যাসই জীবনের জন্য অতি আবশ্যক। বায়ুমণ্ডলে এ দুটি গ্যাসের ভারসাম্য বোঝার জন্য কার্বনচক্র বোঝা দরকার। সকল জীবদেহ গঠনে কার্বন দরকার হয়। এ কার্বন আসে বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড থেকে। পানি ও বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড থেকে উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন ও গ্লুকোজ তৈরি করে। এই গ্লুকোজ উদ্ভিদদেহ তৈরি করে। প্রাণী উদ্ভিদ থেকে খাদ্য গ্রহণ করার মাধ্যমে কার্বন গ্রহণ করে।
চিত্র-১৪.২: কার্বন ও অক্সিজেনের ভারসাম্য
উদ্ভিদ ও প্রাণিদেহের কার্বন তিন ভাবে বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে। প্রথমত, উদ্ভিদ ও প্রাণী শ্বসন প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজ ভেঙে শক্তি উৎপাদন করার সময় বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড বায়ুমণ্ডলে ছেড়ে দেয়। দ্বিতীয়ত, উদ্ভিদ ও প্রাণিদেহকে পোড়লে তাতে কার্বনডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হয়ে বায়ুমণ্ডলে মেশে। তৃতীয়ত, উদ্ভিদ ও প্রাণিদেহ মাটিতে পচবার সময় ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক কার্বন ডাইঅক্সাইড বায়ুতে ছেড়ে দেয়।
তাহলে দেখা গেল, বায়ুমণ্ডল থেকে উদ্ভিদ কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে গ্লুকোজ তৈরির মাধ্যমে উদ্ভিদ ও প্রাণিদেহে কার্বন সঞ্চয় করে। উদ্ভিদ ও প্রাণিদেহের কার্বন তিন ভাবে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড হিসেবে ফিরে আসে। এভাবে পরিবেশে কার্বনের অর্থাৎ কার্বন ডাইঅক্সাইডের ভারসাম্য বজায় থাকে। পরিবেশে এ ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার ফলে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। এ সম্পর্কে এ অধ্যায়েই আমরা জেনেবো।
common.read_more