খাদ্য গ্রহণের নীতিমালা (Principles of food habit) (5.2.3)

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - জীববিজ্ঞান (নতুন সংস্করণ) খাদ্য, পুষ্টি এবং পরিপাক | - | NCTB BOOK
153
153

খাদ্য উপাদান বাছাই করা, সুষম খাদ্য নির্বাচন করা ও সুষম আহার করা উন্নত জীবনযাপনের একটি পূর্বশর্ত। এ জন্য খাদ্যগ্রহণ নীতিমালা বা নিয়মনীতি প্রত্যেকের জানা প্রয়োজন। নীতিমালা সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান থাকলে খাদ্য নির্বাচন, খাদ্যের পুষ্টিমান, ক্যালরি, পারিবারিক আয় ইত্যাদি সম্পর্কে নজর রেখে পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্যের খাদ্যের চাহিদা মেটানো সহজ হয়।


সুষম খাদ্যের বৈশিষ্ট্য


(a) একজন মানুষের বিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উপাদানের সামর্থ্য থাকতে হবে।
(b) শর্করা, আমিষ এবং চর্বি নির্দিষ্ট অনুপাতে পরিমাণ মতো গ্রহণ করতে হবে।
(c) খাদ্যে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও রাফেজ বা সেলুলোজ (ফাইবার) সরবরাহের জন্য সুষম খাদ্য তালিকায় ফল ও টাটকা শাকসবজি থাকতে হবে।
(d) খাদ্যে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি ও খনিজ লবণ থাকতে হবে।
(e) সুষম খাদ্য অবশ্যই সহজপাচ্য হতে হবে।
সুস্থ, সবল ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য সুষম খাদ্যের কোনো বিকল্প নেই। দেহের পরিপুষ্টির জন্য ছয় উপাদানবিশিষ্ট খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করে সুষম খাদ্যের তালিকা বা মেনু পরিকল্পনা করা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দেহের চাহিদা, খাদ্যের সহজলভ্যতা এবং পারিবারিক আয়, এ তিনটি বিষয় বিবেচনা করে খাদ্য উপাদান বাছাই বা মেনু পরিকল্পনা করলে তা বাস্তবমুখী হয়। কম দামি খাবার দিয়ে সমান পুষ্টিমানের মেনু পরিকল্পনা করা যায়; তাই সমমানের উপাদান-সংবলিত বেশি দামের খাদ্যের পরিবর্তে কম দামি খাদ্য নির্বাচন করে সুষম খাদ্য গ্রহণের মানসিকতা থাকা ভালো।

সুষম খাদ্যের তালিকা তৈরি


সুষম খাদ্যের তালিকা তৈরির জন্য কতগুলো বিষয়ের দিকে বিশেষ লক্ষ রাখা প্রয়োজন। যেমন:


১।ব্যক্তিবিশেষের লিঙ্গ, বয়স, পেশা ও শারীরিক অবস্থা।

২।খাদ্যের মূল্যমান সম্পর্কে জ্ঞান

৩।দেহের ক্ষয়পূরণ ও গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আমিষ সরবরাহ নিশ্চিতকরণ

৪।খাদ্যে পরিমাণমতো ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানির উপস্থিতি.

৫।ঋতু, আবহাওয়া ও খাদ্যাভাস সম্বন্ধে জ্ঞান.

৬।পরিবারের আর্থিক সংগতি ও সদস্যসংখ্যা
নিচের সারণিগুলো পর্যবেক্ষণ কর। এ থেকে তোমরা বিভিন্ন বয়সী মানুষের খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ ও ক্যালরি চাহিদা সম্পর্কে ধারণা পাবে।
তালিকা (a): পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ও নারীর জন্য সুষম খাদ্যতালিকা
পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ও নারীর দেহে প্রতিদিনের জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রার ক্যালরি পেতে হলে তালিকায় উল্লিখিত পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য অতিরিক্ত খাদ্যের প্রয়োজন হবে। কিশোর ও যুবা বয়সী ছেলেমেয়েদের বয়স অনুযায়ী পরিমাণে একটু কম খেলেও চলবে।

তালিকা (b): বাংলাদেশের সাধারণ খাদ্যসমূহের পুষ্টিমান
বাংলাদেশের সাধারণ খাদ্যশস্যগুলোর খাদ্যমান বা পুষ্টিমানের উপর ভিত্তি করে এ ছকটি তৈরি করা হয়েছে। এটি The Institute of Nutrition and Food Science (INFS, 1975) কর্তৃক স্বীকৃত ও প্রকাশিত একটি ছক। প্রতি 100 গ্রাম গ্রহণযোগ্য খাদ্যাংশের ভিত্তিতে ক্যালরি মান নির্ধারণ করা হয়েছে।
ক্যালরি মান কীভাবে বের করতে হয়, সেটি এই অধ্যায়েই বর্ণনা করা হয়েছে।

কাজ: তালিকা থেকে শর্করা, আমিষ, চর্বিজাতীয় খাদ্যের তালিকা প্রস্তুত কর।

এছাড়া অন্য যে বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে তা হলো:
খাদ্য তৈরি, পরিবেশন ও গ্রহণের সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা। পানি অবশ্যই ফুটিয়ে পান করতে হবে।
টাটকা ও সবুজ শাকসবজি এবং মৌসুমি ফলমূল গ্রহণ। প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় এগুলো থাকা আবশ্যক। টিনজাত ও হিমায়িত শাকসবজি না খাওয়াই উত্তম।

কাজ: শিক্ষার্থী তার 7 দিনের গৃহীত খাদ্যের একটি তালিকা তৈরি করবে এবং এটিকে সুষম খাদ্যের সাথে তুলনা করে শ্রেণিতে উপস্থাপন করবে।

common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion