এগারো বছরের কিশোর মিদুল প্রায়ই রাস্তার পাশে একাকী বসে থাকে। সব ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলা করলেও তাকে কখনও নেয়না। ছেলেটি ধান কাটতে পারে, নাও বাইতে পারে, অসাধারণ ছবি আঁকতে পারে। শুধু মুখদিয়ে লালা ঝরে ও বাঁকিয়ে হাঁটে বলে সবাই তাকে এড়িয়ে থাকতে চায়। কিন্তু একজন সমাজকর্মী আদিলা তার পিতা-মাতা ও সমবয়সীদের বুঝান যে, "মিদুল সমাজের বোঝা নয়। তারও আছে বাঁচার অধিকার।"
আক্কাস আলী একজন দরিদ্র কৃষক। ধানের চারা লাগাতে লাগাতে সে গুনগুনিয়ে বলে, "ধানগাছ পা-ছাড়া দাঁড়িয়ে, বহু হাত বাড়িয়ে, চারিদিকে ছড়িয়ে, কেশসব উড়িয়ে-উকি মারে আকাশে।” একথা শুনে তার মনিব বলে আক্কাস, অনেক ভালো লাগলো, হৃদয়ের আবেগ, মনের ভাব প্রকাশের শৈল্পিক উপস্থাপন অনেক সুন্দর শোনাচ্ছিল। কিন্তু এখন অনেকের লেখায় কোনো আগা-মাথা পাওয়া যায় না। ধাম করে আরম্ভ করে, ব্যস্ততার কারণে যেন শেষ করা হয় না। সহজ সরল প্রকাশ ভঙ্গিতে জীবনে আংশিক ঘটনা তুলে ধরে।
ধানসাগর গ্রামের মেয়ে মনিকার এস.এস.সি পাস করার পর বিয়ে হয়। কিছুদিন পর যৌতুক দিতে না পারায় স্বামীর সাথে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। জীবনের প্রতি বিরক্ত হয়ে অভিমান করে মনিকা ঢাকায় গিয়ে একটি বাসায় কাজ নেয়। কিন্তু সেখানে গৃহকর্তার এক নেশাগ্রস্ত ছেলের কুদৃষ্টি থেকে বাঁচতে কাজ ছেড়ে পালিয়ে নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টসের কাজে যোগ দেয়। অল্প দিনের মধ্যেই তার কর্মদক্ষতা ও আচার-ব্যবহারে মালিকের মন জয় করে। সহকর্মীরাও মনিকার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়। সবার কাছে তার প্রশংসা শুনে মালিক মনিকার বেতন বাড়িয়ে দেয়।
তিয়াশা স্কুলের পড়া শেষ করে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন কল্প-কাহিনী পড়ে। স্কুলের সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে তার রয়েছে সরব উপস্থিতি। তার গৃহশিক্ষক এ বিষয় নিয়ে প্রায়ই বকাবকি করেন। তিনি তিয়াশাকে বলেন, "গল্প পড়ে সময় নষ্ট করে কোনো লাভ নেই। তোমার পরীক্ষায় কি এসব পড়বে? আমার দেয়া উত্তরপত্রগুলো পড়ো। নিশ্চিত এ-প্লাস পাবে।”