ব্যক্তিজীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (পাঠ ১)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রাত্যহিক জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি | - | NCTB BOOK
164
164

পৃথিবীতে কত নতুন নতুন প্রযুক্তির জন্ম হচ্ছে, আমরা হয়তো তার সবগুলোর কথা জানতেও পারি না। তাই সেগুলো হয়তো আমাদের জীবনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। কিন্তু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এমন একটি প্রযুক্তি যেটি আমাদের সবার জীবনেই কোনো না কোনোভাবে প্রভাব ফেলেছে। পৃথিবীতে মনে হয় একজন মানুষকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে কোনো না কোনোভাবে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করেনি কিংবা তার জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোনো না কোনো পরিবর্তন আনেনি।

আমাদের চারপাশের যে কেউ এখন ইচ্ছে করলে অন্য একজনের সাথে মোবাইল টেলিফোনে যোগাযোগ করতে পারে

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শুধু যে রাষ্ট্রীয় বড় বড় বিষয়ে কিংবা আন্তর্জাতিক জগতে ব্যবহৃত হয় তা নয়-একেবারে সাধারণ মানুষের জীবনেও সেটি ব্যবহৃত হয়। তুমি যদি চোখ মেলে চারদিকে তাকাও তুমি দেখবে তোমার চারপাশে তোমার পরিচিত মানুষেরা, তোমার আত্মীয়স্বজন, তোমার স্কুলের শিক্ষকরা, তোমার ক্লাসের বন্ধুবান্ধবরা এবং তুমি কোনো না কোনোভাবে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করেছ। এই যে তুমি এই মুহূর্তে এই লেখাটি পড়ছ সেটি কেউ একজন লিখেছে-তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেগুলো ছাপা হয়েছে, তোমার সামনে আনা হয়েছে এবং তুমি এখন পড়তে পারছ। এরকম কত উদাহরণ দেয়া যাবে- তুমি কল্পনাও করতে পারবে না।

একজন মানুষের জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কী কী ব্যবহার হতে পারে তার একটা তালিকা তৈরি করার চেষ্টা করলে সেটা মনে হয় কোনোদিন শেষ করা যাবে না। কিন্তু একটু চেষ্টা করে দেখলে কেমন হয়? অন্ততপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটা চেষ্টা করে দেখা যাক।

টেলিভিশন এখন বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম

ব্যক্তিগত যোগাযোগ: তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে প্রথম উদাহরণ হতে পারে ব্যক্তিগত যোগাযোগ। আমাদের চারপাশের প্রায় সবার কাছেই এখন মোবাইল টেলিফোন রয়েছে, যে কেউ এখন ইচ্ছে করলে অন্য একজনের সাথে মোবাইল টেলিফোনে যোগাযোগ করতে পারে। তোমরা নিশ্চয়ই অনুমান করতে পারছ যে, কোনো মানুষের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করতে পারার কারণে আমাদের জীবনের মান এখন অনেক বেড়ে গিয়েছে, অনেক কম পরিশ্রমে আমরা এখন অনেক কিছু করতে পারি যেটা আগে কল্পনাও করতে পারতাম না।

বিনোদন: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দিয়ে আমরা যে শুধু কাজ করতে পারি তা নয়- এটা এখন বিনোদনেরও চমৎকার মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে গান শোনার জন্যে মানুষকে আলাদাভাবে কোনো একটা যন্ত্র কিনতে হতো- এখন মোবাইল টেলিফোনেই সে গান শুনতে পারে। একটা সময় ক্যামেরা ছিল শুধু ধনীদের ব্যবহারের বিষয়- এখন সাধারণ স্মার্ট ফোন দিয়েই যেকোনো মানুষ ছবি তুলতে পারে, ভিডিও করতে পারে। মোবাইল টেলিফোন ধীরে ধীরে বুদ্ধিমান একটা যন্ত্র হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এটা দিয়ে অনেক ধরনের কাজ করা যায়-ঠিক সেরকম কম্পিউটারও ছোট হতে শুরু করেছে। ডেস্কটপ থেকে ল্যাপটপ, ল্যাপটপ থেকে নোটবুক, নোটবুক থেকে স্মার্ট ফোন অর্থাৎ আমাদের হাতে এমন একটা যন্ত্র চলে আসছে যেটা দিয়ে আমরা অসংখ্য কাজ করতে পারব।

জিপিএস পৃথিবীর যেকোনো জায়গার অবস্থান বের করে ফেলতে পারে

জিপিএস: গাড়ি চালিয়ে কোথাও যাওয়ার প্রথম শর্তই হচ্ছে আমাদের পথঘাট চিনতে হবে। কেউ যদি
পথঘাট চিনতে না পারে তাহলে সে কেমন করে গন্তব্যে পৌঁছবে। অথচ মজার ব্যাপার হলো কোথাও যেতে হলে এখন কাউকে পথঘাট চিনতে হয় না। পৃথিবীটাকে ঘিরে অনেক উপগ্রহ ঘুরছে তারা পৃথিবীতে সংকেত পাঠায়, সেই সংকেতকে বিশ্লেষণ করে যেকোনো মানুষ বুঝে ফেলতে পারে সে কোথায় আছে! তার সাথে একটা জায়গার ম্যাপকে জুড়ে দিতে পারলেই একজন মানুষ যে কোনো জায়গায় চলে যেতে পারবে। আজকাল নতুন সব গাড়িতেই জিপিএস লাগিয়ে দেয়া হয়। কোথায় যেতে হবে সেটি জিপিএস-এ ঢুকিয়ে দিলে জিপিএস গাড়ির ড্রাইভারকে সঠিক পথ বাতলে দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারবে। ১২ই মে ২০১৮ বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট মহাকাশে প্রেরণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নামের এই মহাকাশ যানটি যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। নিজস্ব স্যাটেলাইটের অধিকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৫৭ তম দেশ।

দলগত কাজ
মনে করো তুমি ঠিক করেছ কোনো ধরনের তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার না করে তোমার দিন কাটাবে। সারা দিনে কোন কাজগুলো তুমি করতে পারবে না তার একটা তালিকা করো
common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion