নাগরিকের অধিকার অর্জন ও দায়িত্ব পালন (পাঠ ৪)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের নাগরিক | - | NCTB BOOK
111
111

বিশ্বের সব দেশের নাগরিক রাষ্ট্রের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের অধিকার ভোগ করে। বিনিময়ে নাগরিককেও রাষ্ট্রের প্রতি কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। জন্মসূত্রে আমরা এ নাগরিকত্ব অর্জন করেছি। নাগরিক হিসেবে ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য আমরাও সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার ভোগ করি এবং বিভিন্ন ধরনের সুযোগ গ্রহণ করি।

নাগরিকদের অধিকার

বাংলাদেশের সরকার পরিচালনার দলিল "বাংলাদেশের সংবিধান"-এ অধিকারগুলো উল্লেখ করা আছে। এগুলোকে বলা হয় নাগরিকের মৌলিক অধিকার যা জাতি ধর্ম, শ্রেণি, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলের অধিকার। সংক্ষেপে আমাদের মৌলিক অধিকারগুলো হলো: ১. জীবনধারণের অধিকার ২. সম্পত্তির অধিকার ৩. চলাফেরার অধিকার ৪. ধর্মচর্চার অধিকার ৫. চুক্তি করার অধিকার ৬. চিন্তা ও বিবেকের অধিকার ৭. সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ৮. সভা-সমিতির অধিকার ৯. পরিবার গঠনের অধিকার ১০. সংস্কৃতি ও ভাষার অধিকার ১১. কর্ম লাভের অধিকার ১২. স্বাস্থ্য ও শিক্ষা লাভ করার অধিকার ১৩. আইন মেনে চলার অধিকার ১৪. অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিচার পাওয়ার অধিকার ১৫. স্বাধীন মতামত প্রকাশের অধিকার ১৬. রাষ্ট্রীয় পরিসরে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার ইত্যাদি।

নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য

রাষ্ট্রের কাছ থেকে উল্লিখিত অধিকার অর্জনের পাশাপাশি রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকদের কতকগুলো দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে। এর মধ্যে প্রধান দায়িত্বগুলো হলো: ১. রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ২. আইন মেনে চলা ৩. ভোটাধিকার প্রয়োগ করা ৪. নিয়মিত কর প্রদান ৫. সরকারি কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা ৬. সন্তানদের শিক্ষাদান করা।

নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্যগুলো দেশের সকল নাগরিকের জন্য প্রযোজ্য। এসব অধিকার ছাড়া নাগরিকের যথাযথ মানসিক বিকাশ সম্ভব নয়। তাই নাগরিক নিজে এ অধিকারগুলো ভোগ করবে এবং অন্য নাগরিকেরা যাতে ভোগ করতে পারে সেজন্য সচেতন থাকবে। উদাহরণস্বরূপ, নাগরিক নিজে শিক্ষিত হবে অন্যকে শিক্ষিত করার কাজে সহায়তা দেবে। প্রত্যেক নাগরিক নিজের ধর্ম নিজে পালন করবে। অন্য ধর্মের লোককে তাদের নিজ ধর্ম পালনে কোনো বাধা দিবে না। নাগরিক নিজে স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করবে। অন্যকেও মত প্রকাশের সুযোগ দিবে এবং তাদের মতামতকে শ্রদ্ধা করবে। এভাবে নাগরিক নিজের অধিকার ভোগের পাশাপাশি অন্যদের অধিকার সমুন্নত রাখার কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কোনোভাবেই একজনের অধিকার ভোগ যেন অন্যের অধিকার এবং স্বাধীনতা ভঙ্গের কারণ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

রাষ্ট্রের কাছ থেকে বিভিন্ন অধিকার ভোগের পাশাপাশি নাগরিক নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। আজকাল রাষ্ট্রের উন্নয়নে অধিকার ভোগের চেয়ে নাগরিকের কর্তব্য পালনের উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। নাগরিককে তাই নিজের কর্তব্যগুলো ভালোভাবে জানতে ও বুঝতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, নাগরিক রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা মেনে চলবে। কর্মক্ষেত্রে নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে। সন্তানকে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করবে এবং রাষ্ট্রের উন্নয়নে সহায়ক সব ধরনের কাজে সহযোগিতা ও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে। প্রকৃতপক্ষে নাগরিকের কর্তব্য পালনের মাধ্যমেই রাষ্ট্রের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব।

কাজ-১:
কীভাবে নাগরিক হিসেবে তুমি তোমার কর্তব্য পালন করবে সে সম্পর্কে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি কর ও শ্রেণিতে উপস্থাপন কর।
common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion