ছত্রাক, শৈবাল ও অ্যামিবা (পাঠ ৫-৬)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান নিম্নশ্রেণির জীব | - | NCTB BOOK
165
165

ছত্রাক: ছত্রাক সমাঙ্গদেহী ক্লোরোফিলবিহীন অসবুজ জীব। ক্লোরোফিলের অভাবে এরা সালোকসংশ্লেষণ করতে পারে না। তাই এরা পরভোজী অথবা মৃতভোজী। পরভোজী ছত্রাক বাসি ও পচা খাদ্য দ্রব্য, ফলমূল, শাকসবজি, ভেজা রুটি বা চামড়া, গোবর ইত্যাদিতে জন্মায়। মৃতভোজী ছত্রাক মৃত জীবদেহে বা জৈব পদার্থ পূর্ণ মাটিতে জন্মায়।

ছত্রাকের অর্থনৈতিক গুরুত্ব: পেনিসিলিনসহ বহু মূল্যবান ঔষধ ছত্রাক থেকে পাওয়া যায়। পাঁউরুটি তৈরিতে ঈস্ট নামক ছত্রাক ব্যবহার করা হয়। ঈস্ট ভিটামিন সমৃদ্ধ বলে একে ট্যাবলেট হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে। এগারিকাস নামক এক ধরনের মাশরুম সৌখিন খাদ্য বলে বিবেচিত। বর্তমানে আমাদের দেশসহ বহু দেশে এর চাষ করা হয়। আবর্জনা পচিয়ে মাটিতে মেশাতেও ছত্রাকের ভূমিকা রয়েছে।

মানুষ, জীবজন্তু ও উদ্ভিদের বহু রোগের জন্য দায়ী এই ছত্রাক। দাদ, ছুলি (ছোলম) ও মানুষের শ্বাসনালির প্রদাহ ছত্রাকের সংক্রমণে হয়ে থাকে। ছত্রাক আলুর বিলম্বিত ধসা রোগ, পাটের কালোপট্টি রোগ, আখের লাল পচা রোগ সৃষ্টি করে। এরা সহজেই কাঠ ও বেত বা বাঁশের আসবাবপত্র পচিয়ে আমাদের ক্ষতি করে।

ছত্রাক সংক্রমণ প্রতিরোধকরণ: ছত্রাকজনিত রোগ খুবই ছোঁয়াচে। অর্থাৎ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এ রোগ সংক্রমিত হতে পারে। এসব রোগ থেকে নিরাপদ থাকতে যা করা দরকার তা হলো:

  • ছত্রাকজনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্র (কাপড়-চোপড়, চিরুনি, টুপি, স্যান্ডেল) ব্যবহার না করা।
  • ছত্রাকজনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে কম আসা।
  • ছত্রাক আক্রান্ত উদ্ভিদে ঔষধ ছিটানো বা উদ্ভিদ তুলে পুড়িয়ে ফেলা।

শৈবাল: সমাঙ্গবর্গের ক্লোরোফিলযুক্ত ও স্ব-ভোজী উদ্ভিদরাই শৈবাল। এরা মাটি, পানি ও অন্য গাছের উপর জন্মায়। সবুজ ছাড়াও লাল, বাদামি ইত্যাদি রঙের শৈবাল দেখা যায়। 'স্পাইরোগাইরা' নামক শৈবাল বেশিরভাগ জলাশয়ে পাওয়া যায়।

শৈবালের উপকারিতা: আইসক্রিম তৈরিতে সামুদ্রিক শৈবালজাত অ্যালজিন ব্যবহৃত হয়। সামুদ্রিক শৈবাল আয়োডিন ও পটাশিয়ামের একটি ভালো উৎস। মৎস্য চাষে শৈবাল খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

শৈবালের অপকারিতা: মানুষ ও উদ্ভিদের নানা রোগ সৃষ্টিতে শৈবাল দায়ী। যেমন এক ধরনের শৈবাল চা-পাতার রেড রাস্ট রোগ সৃষ্টি করে। জলাশয়ে শৈবালের আধিক্য দেখা দিলে জলজ প্রাণী ও মাছ অক্সিজেনের অভাবে মারা যেতে পারে।

অ্যামিবা : প্রোটিস্টা রাজ্যের সদস্য অ্যামিবা এককোষী জীব। এদের দেহ ক্ষুদ্রাকার। অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া এদের দেখা যায় না। এরা প্রয়োজনে দেহের আকার পরিবর্তন করে থাকে। এদের দেহ থেকে আঙুলের মতো তৈরি অভিক্ষেপকে ক্ষণপদ বলে। এর সাহায্যে অ্যামিবা খাদ্যগ্রহণ ও চলাচল করে। এদের দেহে পানিগহ্বর, খাদ্যগহ্বর ও সংকোচন গহ্বর থাকে। এদের সারা দেহ একটি পাতলা ও স্বচ্ছ পর্দা দ্বারা ঘেরা থাকে। একে প্লাজমালেমা বলা হয়। অ্যামিবা পানিতে, স্যাঁতস্যাঁতে মাটিতে, পুকুরের তলার পচা জৈব আবর্জনার মধ্যে জন্মে।

চিত্র- ১.৬: অ্যামিবার আণুবীক্ষণিক গঠন

common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion