এক. জরিমানা মওকুফের জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে আবেদন।
তারিখ: ৩রা নভেম্বর ২০২২
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
কার্তিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা।
মাধ্যম: শ্রেণিশিক্ষক।
বিষয়: জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন।
মহোদয়,
বিনীত নিবেদন এই যে, আমি আপনার বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। আমি সাধারণত প্রতি মাসের নির্ধারিত তারিখেই আমার বেতন পরিশোধ করে থাকি। কিন্তু এ মাসে বাবা টাকা পাঠাতে দেরি করায় নির্দিষ্ট দিনে বেতন পরিশোধ করতে পারিনি, যে কারণে আমার জরিমানা হয়েছে। আমি আজ বেতন পরিশোধ করতে চাই। কিন্তু আমার পক্ষে জরিমানা দেওয়া কষ্টকর।
অতএব, বিনীত আবেদন এই যে, সহৃদয় বিবেচনার মাধ্যমে জরিমানা মওকুফ করে আমার বেতন পরিশোধ করার অনুমতি দিয়ে বাধিত করবেন।
নিবেদক
আপনার একান্ত অনুগত ছাত্র
ফয়সাল আহমেদ সুমন
শ্রেণি: সপ্তম
রোল নম্বর: ৯
দুই. স্কুলে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার জন্য প্রধান শিক্ষকের নিকট আবেদন।
তারিখ: ৩রা আগস্ট ২০২২
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
জামালপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
জামালপুর।
বিষয়: সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন।
মহোদয়,
বিনীত নিবেদন এই যে, আমাদের স্কুলের টিউবওয়েলটি আর্সেনিকমুক্ত না হওয়ায় আমরা খাওয়ার পানির বিশেষ সংকটে আছি। এ অবস্থায় আমাদের স্কুলে দ্রুত একটি আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েল স্থাপন করা দরকার।
অতএব, জনাবের নিকট বিনীত আবেদন, জরুরি ভিত্তিতে একটি আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েল স্থাপন করে বাধিত করবেন।
বিনীত নিবেদক
জামালপুর স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে
অনিন্দ্য সোম
শ্রেণি: ৭ম
রোল: ০৫
তিন, তোমার এলাকায় পাঠাগার স্থাপনের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যানের নিকট একটি আবেদন পত্র লিখো।
তারিখ: ২রা জুন ২০২২
বরাবর
উপজেলা চেয়ারম্যান
গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ
রাজশাহী।
বিষয়: গোদাগাড়ী পূর্বপাড়ায় একটি পাঠাগার স্থাপনের জন্য আবেদন।
মহোদয়,
সম্মানপূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, আমাদের গোদাগাড়ী পূর্বপাড়ায় হাইস্কুল ও প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীসহ জনসংখ্যা প্রায় দুই হাজারের ওপরে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, এখানে কোনো পাঠাগার নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের জ্ঞানচর্চা, মানসগঠন ও সৃজনশীল চেতনা বিকাশে একটি পাঠাগার খুবই প্রয়োজন। এ ছাড়া এলাকায় দৈনিক পত্রিকা ও সাময়িক পত্র-পত্রিকা পড়ারও কোনো ব্যবস্থা নেই। এখানে একটি পাঠাগার হলে তরুণরাও তাদের অলস সময়কে জ্ঞানচর্চার মতো প্রয়োজনীয় কাজে ব্যয় করতে পারবে।
অতএব, গোদাগাড়ী পূর্বপাড়ায় সব বয়সের জনসাধারণের উপকারের কথা বিবেচনা করে অতিসত্বর এখানে একটি পাঠাগার স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
নিবেদক
গোদাগাড়ী পূর্বপাড়ার জনসাধারণের পক্ষে
রোদেলা শারমিন
চার, তোমার ছাত্রাবাস জীবনের অভিজ্ঞতা জানিয়ে তোমার মাকে পত্র লেখ।
শাহজাদপুর
সিরাজগঞ্জ
১৪ই জুন ২০২২
পূজনীয় মা
আমার প্রণাম নিও। বাবাকে আমার প্রণাম দিও। তুমি ও বাবা কেমন আছ? তোমাদের জন্য আমার সব সময়ই চিন্তা হয়। নিজেদের শরীরের প্রতি যত্ন নিও। আমি এক সপ্তাহ আগে আমার স্কুলের ছাত্রীনিবাসে উঠেছি। ছাত্রীনিবাসের পরিবেশ খুবই ভালো। বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্রীরা এখানে থাকে। ছাত্রীরা পরস্পরের প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতিশীল। যে কারণে কারো কোনো সমস্যা হয় না। অবসর সময়ে অনেকে একসাথে গল্প করি। আমাদের বাড়িতে সন্ধ্যায় যেমন সবাই একত্রে আড্ডা দিই, অনেকটা সেই রকম। ছাত্রীনিবাসের মধ্যেই একটি ছোট পাঠাগার আছে। এখানে পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সাহিত্য, বিজ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞানের বই আছে। ওখানে বসে বই পড়া যায় আবার তিন দিনের জন্য কক্ষেও নিয়ে আসা যায়। আমার কক্ষে যে মেয়েটি আছে, সেও ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। ওর নাম মণি। ও খুলনার মেয়ে। মণি খুবই সুন্দর রবীন্দ্রসংগীত গায়। তোমাদের জন্য মন খারাপ হলে মণি আমাকে গান শোনায়। আমার কক্ষটা চারতলায়। কক্ষের জানালায় দাঁড়ালে সবুজ গাছের উপর দিয়ে সুন্দর আকাশ দেখা যায়। ছাত্রীনিবাসে একটি মিলনায়তন আছে, সেখানে ক্যারম ও টেবিল টেনিস খেলা যায়, শীতের সময় ব্যাডমিন্টন খেলার ব্যবস্থা করা হয়। প্রথম প্রথম ছাত্রীনিবাসের খাবার খুব ভালো লাগত না, তখন তোমার রান্নার কথা খুব মনে হতো। কিন্তু এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছি। প্রতি মাসে দু বার বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়, তখন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে অনেকটা উৎসবের মতো। আমাকে নিয়ে চিন্তা করো না। আশা করি আমি ভালোই থাকব।
স্বচ্ছ কেমন আছে? ওর লেখাপড়ার প্রতি নজর রেখো। পূজার ছুটি হলেই আমি বাড়ি চলে আসব। আমার জন্য আশীর্বাদ করো।
ইতি
তোমাদের আদরের
শুভ্রা গোস্বামী
পাঁচ. তোমার জীবনের লক্ষ্য কী জানিয়ে বড় ভাইকে চিঠি লেখ।
দোহার, ঢাকা
১৩ ই জানুয়ারি ২০২২
শ্রদ্ধেয় বড় ভাই,
আমার সালাম নেবেন। বাড়ির সকলে আমরা ভালো আছি। আমার স্কুলের ক্লাস ভালোভাবে শুরু হয়েছে। আমিও পড়াশোনা শুরু করেছি। আদরের ছোট বোন অত্রিকে ভর্তি করানো হয়েছে। আপনার কথামতো আমরা দু'জনে একসঙ্গে স্কুলে যাই। আপনি চিন্তা করবেন না।
আপনি জানতে চেয়েছিলেন আমি বড় হয়ে কী হতে চাই। আমাদের জলীল স্যারকে তো আপনি চেনেন। আমি স্যারকে খুব পছন্দ করি। স্যার আমাদের খুব ভালোভাবে পড়ান। পড়ানোর সময় আমরা কীভাবে বড় হতে পারব, দেশের মানুষের সেবা করতে পারব, পৃথিবীকে আরো সুন্দর করতে পারব-এসব বলেন। আমার মনে হয়, আমাদের দেশের জন্য এখনো আদর্শ শিক্ষক অনেক বেশি দরকার। তাই আমি ঠিক করেছি, ভালোভাবে পড়ালেখা শেষ করে আমি শিক্ষক হব।
আপনি আমার জন্য দোয়া করবেন। আমাদের এলাকার সবাই ভালো আছেন। দাদা-দাদি এখন বেশ সুস্থ। আপনি বাড়ি আসার সময় আমার জন্য বিজ্ঞানবিষয়ক মাসিক পত্রিকা নিয়ে আসবেন। ভালো থাকবেন।
ইতি
আপনার আদরের
সুমন রহমান অর্ক
ছয়, তোমার এলাকার একটি লোকজ উৎসবের বর্ণনা দিয়ে প্রবাসী বন্ধুকে পত্র লিখ।
প্রিয়াঙ্কা বড়ুয়া
রাজানগর, চট্টগ্রাম
তারিখ: ৮ই মে ২০২২
প্রিয় পুতুল,
আমার প্রীতি ও ভালোবাসা নাও। আজ প্রায় দুই বছর হতে চলল তুমি রাশিয়া চলে গেছ। আমাদের দুজনের জীবন যে প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর ছিল, তা কিছুতেই ভুলতে পারি না। তুমি তোমার বাবা-মার সঙ্গে রাশিয়া চলে যাওয়ার পর এখনো আমাদের এলাকার নানা অনুষ্ঠান সেই আগের মতোই আমরা উপভোগ করি। তবে আমরা তোমার অভাব বোধ করি। এবার আমাদের এলাকায় বেশ বড় আয়োজনে বৈশাখী উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ আমি সেই উৎসবের কথা বলতেই তোমাকে চিঠি লিখছি।
তুমি তো জান, আমাদের সারা বাংলাদেশেই পহেলা বৈশাখ নববর্ষ হিসেবে পালিত হয়। এখন আমাদের রাঙ্গুনিয়াতেও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে ব্যাপক আয়োজনে নানা অনুষ্ঠান হয়। রাজানগরে এবারই প্রথম বৈশাখী উৎসবের অনুষ্ঠান হয়। স্বপন, পুলক, হ্যাপী, চৈতালী, অনিক, দীপা, কুমকুম, নাহার, রাজু, সজল এবং আমি সবাই মিলে সকাল সকাল আমাদের বিদ্যাময়ী স্কুলের মাঠে চলে যাই। প্রথমে ওখান থেকে সকাল সাতটায় শুরু হয় বৈশাখী শোভাযাত্রা। নানা রঙের ব্যানার-ফেস্টুন হাতে আমরা র্যালিতে অংশ নিই। র্যালি শেষ করে স্কুলের মাঠে চলে আসি। ওখানেই বিশাল আকারে মেলা বসেছে। মাঠের উত্তর দিকে চড়কগাছের আয়োজন, তার পাশে বসেছে চুড়ির দোকান। ছোট ছোট বাক্সে নানা ধরনের চুড়ির পসরা সাজিয়ে বসেছে মহিলারা। তার পাশে চানাচুর ও নিমকি ভাজা ও বিক্রি চলছে। আমি গরম নিমকিভাজা আধা কেজি কিনে সবাই মিলে খেয়েছি আর ঘুরে ঘুরে মেলাটা দেখেছি। মাঠের পূর্ব কোণে বাঁশ-বেতের নানা গৃহস্থালি দ্রব্য নিয়ে বসেছে বিক্রেতারা। ওখানেও বেশ ভিড়। তার পাশেই নানা ধরনের বেলুন, বাঁশির পসরা বসেছে। আমি আমার ছোট বোন প্রিয়ন্তির জন্য বেলুন ও বাঁশি কিনেছি। ওর জন্য রঙিন ফিতাও কিনেছি। দীপা তো যেটা দেখে সেটাই কেনে এমন অবস্থা ওর। হাতে যে কয়টা টাকা ছিল, সব টাকায় দীপা ওর ভাই-বোনের জন্য নানা জিনিসপত্র কিনেছিল। রাজু, সজল, হ্যাপী, অনিক, স্বপন বাঁশের তৈরি কলমদানি কিনেছিল। আমরা সবাই মিলে চড়কগাছেও উঠলাম। ওখানে উঠে তো চৈতালী ভীষণ ভয় পেয়ে গেল। কিন্তু কি আর করা, দশপাক না খেয়ে তো আর নামা যাবে না। চৈতালী বলেছে, ও আর কখনো চড়কগাছে উঠবে না।
আজ আর লিখছি না। তুমি ভালো থেকো। জ্যাঠা-জেঠিমাকে শ্রদ্ধা দিও। তোমার সব খবর জানিয়ে আমাকে লিখো। তোমার জন্য অসীম ভালোবাসা রইল।
ইতি
প্রিয়াঙ্কা বড়ুয়া
common.read_more